নিউজ ডেস্কঃ
সোনারগাঁও বাসীর দীর্ঘ দিনের জল্পনা কল্পনার পর অবশেষে সরকারি হাসপাতালে কর্মরত (SECMO) জাহাঙ্গীর আলম রাসেলকে বদলি করা হয়েছে। এই বদলির খবরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন সোনারগাঁওবাসী। হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট অনেকেই দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছিলেন যে, তিনি একাধারে দুর্নীতি, অনিয়ম ও পেশাগত অসদাচরণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম রাসেলের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে নারী কেলেঙ্কারি, রোগীনিদের সাথে অশোভন আচরণ, ভুয়া সার্টিফিকেট বাণিজ্যে জড়িত থাকা, সরকার নির্ধারিত অফিস সময়ে ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা, হাসপাতালের ওষুধ ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে দুর্নীতি, এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে অবস্থান করা।
সবচেয়ে চরম অভিযোগ হলো, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ‘সোনিয়া’ নামে এক মেয়েকে ধর্ষণ করার ঘটনা। এই ঘটনার প্রমাণ হিসেবে সরকারি হাসপাতালের প্রহরী তাইজুলের সঙ্গে হওয়া একটি অডিও রেকর্ডিং ইতোমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, তাইজুল জাহাঙ্গীর আলমের অপকর্মের ইঙ্গিত দিচ্ছেন। এই অভিযোগটি সোনারগাঁওবাসীর মধ্যে যথেষ্ট চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। এছাড়াও, বিভিন্ন কুচক্রী মহলকে পুঁজি করে এক বিরাট দুর্নীতির সম্রাজ্য গড়ে তোলেন তিনি।
জাহাঙ্গীর সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান কালাম এর ক্যাডার বাহিনীর সদস্য ছিলেন।
জাহাঙ্গীর সরাসরি আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।
হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা যায়, দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থেকে তিনি এক ধরনের ‘দুর্নীতির সাম্রাজ্য’ গড়ে তুলেছিলেন। ফলে, সাধারণ রোগীরা যেমন চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন, তেমনি হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসক ও কর্মচারীরাও নানা ভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছিলেন। রোগীদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করে সরকারি হাসপাতালে কেবিন বাণিজ্য চালাতেন। এছাড়া, টাকার বিনিময়ে মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রদান করতেন এবং সরকারি অফিস সময়ের মধ্যে নিজের ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখতেন।
ডায়াগনস্টিক সেবার সাথে কমিশন বাণিজ্য এবং ঔষধ কোম্পানির সাথে ঘনিষ্ঠতা থেকে কমিশন গ্রহণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ টাকা সঞ্চয় করেছেন তিনি।
সোনারগাঁওয়ের সচেতন নাগরিকরা বহুদিন ধরে এই সেকমোর অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তার অপকর্ম নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা চলছিল। শেষ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জনঅসন্তোষ ও তদন্তের ভিত্তিতে তার বদলির আদেশ জারি করে।
এব্যাপারে স্থানীয়রা বলেন, “আমরা বহুদিন ধরেই তার কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলাম। এই বদলি আমাদের জন্য একপ্রকার মুক্তির নামান্তর।”